শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

আইনি কাঠামোয় আসছে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট

আইনি কাঠামোয় আসছে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট

স্বদেশ ডেস্ক:

ভাগ্যাহত, সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পেশাগত দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হচ্ছে ‘শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২৩’। বর্তমানে গেজেট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত হয়ে আসছে। এটিকে আইনি কাঠামোয় রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

সূত্রের খবর, আইন না থাকায় আর্থিক অসচ্ছলতা, ব্যয়ের সীমাবদ্ধতা, এমনকি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা ছিল। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রেও বিধিতে ছিল অস্পষ্টতা। ট্রাস্টের পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি না বেসরকারি, নাকি আধাসরকারিÑ এ নিয়েও ছিল প্রশ্ন। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের অনুপাতে বেতন পেলেও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সরকারি হারে পেতেন না। আইনে ট্রাস্টকে ‘সংবিধিবদ্ধ সংস্থা’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরি শেষে অবসর/পেনশন প্রকৃতির সুবিধা পাবেন। উপরন্তু বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতাও দূর হবে।

নতুন আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক (উপসচিব) মো. আবুল বশার আমাদের সময়কে বলেন, ১৯৮৯ সালে গেজেট দ্বারা গঠন করা হয় ‘পথকলি ট্রাস্ট’। ‘পথকলি ট্রাস্ট’কে ১৯৯২ সালে ফের গেজেট দ্বারা নামকরণ করা হয় ‘শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট’।

ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভাগ্যহত, সুবিধাবঞ্চিত, হতদরিদ্র এবং নিজ প্রচেষ্টায় ও শ্রমে ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়াসী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পেশাগত দক্ষতার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা। শ্রমজীবী শিশু-কিশোরদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। শ্রমজীবী শিশু-কিশোরদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। এ লক্ষ্যেই গঠন করা হয় এই ট্রাস্ট।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ পরিষদে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী অথবা তৎকর্তৃক মনোনীত অন্য কোনো মন্ত্রী, যিনি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সিনিয়র সচিব উপদেষ্টা পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন।

ট্রাস্টের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ট্রাস্টে একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ হবে। সরকার যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার নিম্নে নয়, এমন কর্মকর্তাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই কর্মকর্তা ট্রাস্টের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

সরকারের পূর্বানুমোদনসাপেক্ষে ট্রাস্টি বোর্ড প্রয়োজনে নতুন বিদ্যালয় স্থাপন করতে পারবে। শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন স্কেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুরূপ হবে এবং ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হবে।

এই আইনে কোনো বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে অস্পষ্টতা দূর করতে পারবে।

প্রতি অর্থবছর শেষ হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ট্রাস্ট একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করবে। সরকার প্রয়োজনমতো ট্রাস্টের নিকট হতে যে কোনো সময় ট্রাস্টের যে কোনো বিষয়ের ওপর রিটার্ন, বিবরণী, প্রাক্কলন, পরিসংখ্যান, তথ্য, প্রতিবেদন বা দলিল সরবরাহের জন্য নির্দেশ প্রদান করতে পারবে। ট্রাস্ট তা সরকারের কাছে সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে বলেও আইনের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877